এফিলিয়েট মার্কেটিং কি? এফিলিয়েট মার্কেটিং -এ সফল হবেন যেভাবে
বর্তমান সময়ে মানুষের প্রযুক্তি ও অনলাইন নির্ভর মানসিকতার কারণে অনলাইনে উপার্জন করা বেশ সহজ হয়ে গেছে। বর্তমানে প্রযুক্তির এর যুগে মানুষ সকালে থেকে শুরু করে রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগ মুহূর্ত পর্যন্ত প্রযুক্তির উপরে নির্ভরশীল। ইন্টারনেট মানুষের জীবনে প্রভাব ফেলছে। মানুষের এই প্রযুক্তি ও অনলাইন নির্ভর মানসিকতার কারণে বিশেষ কোনো ডিগ্রি বা দক্ষতা না থাকলেও অনেকে বাড়িতে বসে অনলাইনে প্রতি মাসে হাজার হাজার টাকা ইনকাম করছেন।
আমরা চাইলে অনলাইনে নিজে একটি ওয়েবসাইট খুলে অথবা ফেসবুক পেজ তৈরি করে কিংবা ইউটিউব চ্যানেল খুলে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে টাকা আয় করতে পারি।
আজকে আমি এফিলিয়েট মার্কেটিং কি?, এফিলিয়েট মার্কেটিং এর গুরুত্ব, এফিলিয়েট
মার্কেটিং -এ সফল
হবেন যেভাবে, খুঁটিনাটি সকল বিষয় তুলে ধরবো এবং আপনার ভিতর জমে থাকা সমস্ত প্রশ্নের উত্তর দেব।
আজকে আমরা আলোচনা করব -
১। এফিলিয়েট মার্কেটিং
কি?
২। এফিলিয়েট মার্কেটিং এর গুরুত্ব
৩। এফিলিয়েট মার্কেটিং -এ সফল হবেন যেভাবে
১। এফিলিয়েট মার্কেটিং
কি?
এফিলিয়েট মার্কেটিং হচ্ছে কোন পণ্যের প্রমোশন করে পণ্যটি বিক্রি করানো, যেখানে পণ্যের প্রমোশনকারী বিক্রয়মূল্যের উপর কিছু পারসেন্ট কমিশন পেয়ে থাকে। অর্থাৎ এফিলিয়েট মার্কেটিং হল একটি ব্যবসা যে ব্যবসাতে আপনার নিজস্ব কোন পণ্যের বা পরিষেবার প্রয়োজন হয় না কিন্তু আপনি অন্য কোন কোম্পানির পণ্যকে প্রচার করে টাকা ইনকাম করতে পারবেন পারসেন্টেজ হিসেবে।
আরো সহজ কথায় বলতে গেলে অন্যের পণ্য আপনার ওয়েবসাইট, ফেসবুক পেজ, ইউটিউব চ্যানেলে, সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে বিজ্ঞাপন দিয়ে বিক্রি করে কমিশন ইনকাম করাকে বলা হয় এফিলিয়েট মার্কেটিং।
২। এফিলিয়েট মার্কেটিং এর গুরুত্বঃ
বর্তমান সময়ে মানুষের প্রযুক্তি ও অনলাইন নির্ভর
মানসিকতার কারণে এফিলিয়েট মার্কেটিং এর গুরুত্ব অনেক।
নিম্নে এফিলিয়েট মার্কেটিং এর গুরুত্ব তুলে
ধরা হল-
১। ঝুঁকি কমঃ
এফিলিয়েট মার্কেটিং করার জন্য কোন টাকা লাগেনা বলে এতে ঝুঁকিও কম। তাই এই সেক্টর দিন
দিন জনপ্রিয় হচ্ছে।
২। কার্যকরী মার্কেটিংঃ
এফিলিয়েট মার্কেটিং ব্যবসাগুলিকে একটি বাজারের লক্ষ শনাক্ত করার জন্য এবং তাদের ব্র্যান্ডকে কার্যকরভাবে প্রচার করার জন্য উপযুক্ত প্রতিনিধি নির্বাচন করে দেয়। তাই এফিলিয়েট মার্কেটিং একটি কার্যকরী মার্কেটিং।
৩। স্বাধীনভাবে কাজ করা যায়ঃ
এফিলিয়েট মার্কেটিং করলে স্বাধীনভাবে কাজ করা যায়। আপনি চাইলে নিজ ঘরে বসে কাজ করতে পারেন, আপনি আপনার কাজের সময়সূচি নিজেই ঠিক করতে পারেন। এফিলিয়েট মার্কেটিং নিজের স্বাধীনতাকে প্রমোট করে।
৪। খুব সহজে শুরু করা যায়ঃ
এফিলিয়েট মার্কেটিং খুব সহজে শুরু করা যায়। যে কেউ এটি
করতে পারে।এফিলিয়েট মার্কেটিং শুরু করার জন্য আপনার বিনিয়োগ বা বিশেষ দক্ষতার
প্রয়োজন নেই।
৫। ঘুমানোর সময়ও অর্থ উপার্জনের সম্ভাবনাঃ
আপনি যদি অ্যাফিলিয়েট লিঙ্কগুলি আপনার ওয়েবসাইট, ফেসবুক পেজ, ইউটিউব চ্যানেলে, সোশ্যাল মিডিয়ায় সেট আপ করেন এবং
অনলাইনে আপনার ফলোয়াররা ঐ লিঙ্কগুলির কোন
একটি থেকে একটি পণ্য ক্রয়
করে, তাহলে আপনি ঘুমানোর সময়ও অর্থ উপার্জন করতে পারবেন৷
৬। সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে টাকা আয়ঃ
আমরা অযথা সোশ্যাল মিডিয়াতে সময় নষ্ট না করে এফিলিয়েট
মার্কেটিং করে টাকা আয় করতে পারি।
সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে আপনার জনপ্রিয়তা প্রসারিত করে খুব সহজে এফিলিয়েট মার্কেটিং এর মাধ্যমে টাকা
আয় করতে পারেন।
৩। এফিলিয়েট মার্কেটিং -এ সফল হবেন যেভাবেঃ
১। কোয়ালিটিফুল কন্টেন্ট
তৈরিঃ
এফিলিয়েট মার্কেটিং -এ সফল হওয়ার
জন্য কোয়ালিটিফুল
কন্টেন্ট তৈরি গুরুত্বপূর্ণ। তথ্যপূর্ণ এবং আকর্ষণীয় বিষয়বস্তু নিয়ে কনটেন্ট তৈরি করুন, তাহলে দর্শকদের
কাছে আপনার মূল্য বাড়াবে। মনে রাখবেন, মানসম্পন্ন বিষয়বস্তু নিয়ে ব্লগ পোস্ট বা ভিডিও তৈরি
করতে হবে। কেননা মানসম্পন্ন কন্টেন্ট,
দর্শকদের কাছে আপনার বিশ্বাসযোগ্যতা তৈরির একটি অন্যতম চাবিকাঠি।
২। কি-ওয়ার্ড রিসার্চঃ
এফিলিয়েট মার্কেটিং -এ সফল হওয়ার জন্য কি-ওয়ার্ড রিসার্চ গুরুত্বপূর্ণ। আপনার দর্শক গুগলে যে কি-ওয়ার্ডগুলি অনুসন্ধান করছে তা শনাক্ত করে ঐ কি-ওয়ার্ড দিয়ে কন্টেন্ট তৈরি করতে হবে। এতে করে আপনার লেখাটি গুগলের প্রথম পেজে আসার সম্ভাবনা থাকবে।
৩। অন-পেজ SEO:
এফিলিয়েট মার্কেটিং -এ সফল হওয়ার জন্য অন-পেজ SEO গুরুত্বপূর্ণ। মেটা ট্যাগ, শিরোনাম, এবং ইমেজ অল্ট টেক্সটের মতো সঠিক অন-পেজ SEO করে সার্চ ইঞ্জিনের জন্য আপনার ওয়েবসাইট তৈরি করুন।
৪। ব্যাক লিঙ্ক তৈরিঃ
এফিলিয়েট মার্কেটিং -এ সফল হওয়ার জন্য ব্যাক লিঙ্ক তৈরি গুরুত্বপূর্ণ। আপনার ওয়েবসাইটটি র্যাংক করার জন্য উচ্চ-মানের ব্যাক লিঙ্ক তৈরি করতে হবে। গেস্ট পোস্টিং করতে হবে।
৫। আকর্ষণীয় পণ্যের রিভিউ তৈরি করুন:
এফিলিয়েট মার্কেটিং -এ সফল হওয়ার
জন্য আকর্ষণীয় পণ্যের রিভিউ তৈরি করতে হবে। আপনি যে পণ্যগুলি প্রচার
করছেন তার সুবিধাগুলি হাইলাইট করতে হবে।
৬। ই-মেইল মার্কেটিংঃ
এফিলিয়েট মার্কেটিং -এ সফল হওয়ার জন্য ই-মেইল মার্কেটিং গুরুত্বপূর্ণ। আপনার দর্শকদের সাথে সম্পর্ক গড়ে তুলতে দর্শকদের ই-মেইল তালিকা তৈরি করতে হবে। আপনি যে পণ্যগুলি প্রচার করছেন তার সুবিধাগুলি ই-মেইলের মাধ্যমে আপনার দর্শকদের সাথে শেয়ার করতে হবে।
৭। শেখার জন্য সময় বিনিয়োগঃ
এফিলিয়েট মার্কেটিং -এ সফল হওয়ার জন্য শেখার
জন্য সময় বিনিয়োগ গুরুত্বপূর্ণ। ডিজিটাল মার্কেটিং এর জগৎ গতিশীল। তাই কোর্স, ব্লগ
এবং শিল্প প্রকাশনার মাধ্যমে ক্রমাগত শেখার জন্য সময় বিনিয়োগ করে করে নিজেকে আপডেট
রাখতে হবে।
শেষ কথাঃ
আপনার শ্রোতাদের চাহিদাকে পূরণ করতে, ভাল
মানের কনটেন্ট তৈরি করতে হবে। পরিকল্পনার মাধ্যমে, আপনার আর্থিক লক্ষ্যগুলি অর্জন করতে
পারেন এবং একটি সফল অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং ব্যবসা তৈরি করতে পারেন৷ আজকের পোষ্টটি
ভালো লাগলে আপনার মতামত কমেন্ট করে জানাবেন। আপনাদের সুন্দর মতামত আমাদের লেখালেখির
আগ্রহ আরো বাড়িয়ে দেবে।
এফিলিয়েট মার্কেটিং |
0 মন্তব্যসমূহ